অবক্ষয় যুগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা-
মধ্যযুগের পরিধি ১২০১ থেকে ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত বলে বিবেচনা করা হলেও প্রকৃতপক্ষে ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে এই যুগের সর্বশেষ কবি ভারতচন্দ্র রাংগুণাকরের তিরোধানের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা কাব্যের ইতিহাসে মধ্যযুগের অবসান ঘটে। ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতচন্দ্রের মৃত্যুর পর থেকে ১৮৬০ সালে আধুনিকতার যথার্থ বিকাশের পূর্ব পর্যন্ত এই একশ বছর বাংলা কাব্যের ক্ষেত্রে উৎকর্ষপূর্ণ কোনো নিদর্শন বিদ্যমান নেই।
সৈয়দ আলী আহসান ১৭৬০-১৮৬০ খ্রি. সময়কে প্রায় শূন্যতায় যুগ বলে উল্লেখ করেছেন। মধ্যযুগের শেষ আর আধুনিক যুরেগ শুরুর েএই সময়টুকুকে অবক্ষয় যুগ বলা হয়েছে। কারও কারও মতে, এই সময়টা যুগ সন্ধিক্ষণ নামে আখ্যায়িত হওয়া উচিত। এ সময় একমাত্র প্রতিনিধি হচ্ছেন কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের (১৮১২-১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দ) জন্ম চব্বিশ পরগনা জেলার কাঁচাপাড়া গ্রামে।
তাঁর হাত ধরেই বাংলা কবিতা মধ্যযুগের গন্ডি পেরিয়ে আধুনিকার রূপ পেয়েছে। বাংলা সাহিত্যে দুই যুগের মিলনকারী হিসেবে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। এইজন্য তাঁকে যুগসন্ধিক্ষণের কবি বলা হয়। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের বিখ্যাত পঙ্গক্তি।
কতরূপ স্নেহ করি, দেশের কুকুর ধরি,
বিদেশের ঠাকুর ফেলিয়া, ( কবিতা-স্বদেশ)
নগরের লোক সব এই কয় মাস।
তোমার কৃপায় করে মহাসুখে বাস। (কবিতা -তপসে মাছ)
লও তুমি যত পার শাস্ত্রের সন্ধান। (শাস্ত্র পাঠ)