সবার মনেই একটা দ্বন্দ্ব থাকে, কিছুটা দ্বিধা থাকে। প্রতিটি মুসলমানের মনে এই সন্দেহ বাসা বাঁধেই যে আমি আল্লাহর দরবারে যে আরজী পেশ করলাম, তা কি পূর্ণ হল? আমার দুআ কি আল্লাহ তাআলা মঞ্জুর করেছেন। এক্ষেত্রে নেতিবাচক মনোভাবই সাধারণত সবাই পোষণ করে থাকে। কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা না। আল্লাহ তা’আলা নিশ্চয়ই ঘোষণা দিয়েছেন- তোমরা আমাকে ডাকো, আমার কাছে চাও, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। এরপর কেন মানুষের দুআ কবুল হয় না? কেন বার বার এই সন্দেহ মনে দানা বাধে যে, আমার প্রতি হয়তো আল্লাহ পাক সন্তুষ্ট নন, তাই আমার আরজী তিনি শুনেন না। এখানেই মানুষের জন্য চিন্তার বিষয়।
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয়, দুআ নিয়ে আজকাল অনেককেই কটাক্ষ করতে শোনা যায়। কেউ প্রকাশ্যে করে, আবার কেউ গোপনে। দুআর মুহূর্ত ও কার্যকারিতাকে অস্বীকার করে। এটাকে ছেলে ভুলানো সান্তনা বা অন্ত:সারশূন্য আশ্বাস বাণীর পর্যায়েভুক্ত প্রমাণ করার স্পর্ধা দেখায়। এই স্বল্প পরিসরে তাদের এই ঔদ্ধত্য আর ভ্রান্ত বিশ্বাসের সমোচিত জবাব দেওয়া সম্ভব নয় বলে সে দিকটি বাদ দিয়ে দুআ কেন কবুল হয় না বা কিভাবে দুআ করা উচিত, দুআর আদব কি? এর সম্পর্কিত আলোচনা তুলে ধরা হলো। আশা করি এই আলোচনার অনুযায়ী কেউ যদি দুআর পরিপূর্ণ আদাব রক্ষা করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, তবে আল্লাহ পাক তাকে ফিরিয়ে দিবেন না। বরং তখন আল্লাহ পাক তাকে এমন অতিরিক্ত কিছু নেয়ামত দ্বারা পুরস্কৃত করবেন, তার কল্পনাতেও আসে না। তবে একথা সত্য যে, মানুষ দুআর ভিতর আল্লাহর কাছে যা চায়, তা কখনো তাৎক্ষণাৎ পেয়ে যায়, কখনো এই দুয়ার কারণে তার ভবিষ্যতের কোন বালা মুসিবত কেটে যায়। আবার কখনো বা আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের অন্তত জীবনের জন্য এই দুয়ার প্রতিদান সংরক্ষিত করে রেখে দেন।
কোরআনে উল্লেখ আছে যে, হাশরের ময়দানে যখন আল্লাহ তাআলা বান্দার সামনে এই অপ্রত্যাশিত প্রতিদান হাজির করবেন, তখন সে খুশির অতিশয্যে আফসোস করে বলতে থাকবে- হায় ! দুনিয়াতে যদি আমার প্রতিটি দুয়ার প্রতিদান আজকের দিনের জন্য জমা রাখা হতো। তখন আমার একটি দোয়াও যদি কবুল না করা হতো। আর সব আজ আমাকে দেওয়া হতো !