Arrival of European traders in India and the first waterways
ভারতবর্ষের ছিল সমৃদ্ধ জনপদ। প্রাচীনকাল থেকেই এর সম্পদের আকর্ষণে ভারতবর্ষে বিভিন্ন জাতির আগমন ঘটেছে- বিশেষ করে বণিক গোষ্ঠীর। তাদের মধ্যে ইউরোপীয় বণিকরা এসেছিল মূলত তিনটি দ্রব্যের আকর্ষণে- মসলা, সুগন্ধি দ্রব্য এবং সিল্ক। ইউরোপের শুকনো মাংস সহ খাবারকে মুখরোচক করার জন্য মসলার চাহিদা ছিল ব্যাপক। আবার সুগন্ধি দ্রব্য কে তখন সাবানের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তাছাড়া ভারতের অন্যতম মানের বস্ত্র, বিশেষ করে রেশমের কাপড় ও মসলিনকে ইউরোপীয় ‘উল’ কিংবা লিনেন কাপড়ের তুলনায় অভিজাত পণ্য করা হতো।
প্রাচীন ও মধ্যযুগে ইউরোপ থেকে স্থলপথে মধ্য এশিয়া হয়ে ভারতবর্ষে বাণিজ্য পরিচালনা করা ছিল ব্যয়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে ইউরোপীয় ভারতে আসার নৌ বা জলপথ আবিষ্কারের আগ্রহী ছিল। এ নৌপথ আবিষ্কারের প্রথম প্রচেষ্টা চালায় পর্তুগাল ও স্পেনের নাবিকরা। পর্তুগিজ নাবিক ও অভিযাত্রী ভাসকো-দা-গামা আফ্রিকা মহাদেশের উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ ভারতের কালিকট বন্দরে পৌঁছাতে সক্ষম হন। আবিষ্কৃত হয় একটি নতুন জলপথ।
এর ফলে ভারতবর্ষের সাথে ইউরোপের তুলনামূলক নিরাপদ বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থাপিত হয়। অনুসরণ করে একে একে ওলন্দাজ, দিনেমার, ফরাসি ও ইংরেজ বণিকরা ভারতবর্ষে আসে। তবে একমাত্র ইংরেজরাই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সক্ষম হয়। ইংরেজরা বাণিজ্য করতে এলেও ভারতের স্থানীয় রাজন্যবর্গের অন্তর্কলহের সুযোগ নিয়ে এখানকার রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে। চূড়ান্ত পর্যায়ে তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলার নবাব সিরাজ-উদ্দৌলাকে পলাশীর প্রান্তরে এক প্রহসনের যুদ্ধে হারিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করে। এর মধ্য দিয়ে ভারতে ইংরেজদের ভবিষ্যৎ সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাাপিত হয়।