সুশান্ত পালকে নিয়ে বর্তমানে প্রশ্ন ফাঁসের নাম উঠে এসেছে। বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক- সকলে ধারণা করেন যে সুশান্ত পালের সফলতা অসাধু উপায়ে, প্রশ্নফাঁস,প্রশ্নচুরির মাধ্যমে বিসিএসএ প্রথম হন। এখনও পর্যন্ত তিনি ছাত্রদের পাশে দাড়াননি।
সুশান্ত পালের জন্ম চট্রগ্রামে। তাঁর ডাক নাম বাপ্পি। অষ্টমশ্রেনীতে তিনি বৃত্তি পান। ২০০০ সালে চট্রগ্রাম মিউনিসিপাল স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করেন। এরপর ২০০২ সালে চট্রগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এইচএসসিতেও তিনি ভালো ফলাফল করেন। ইংরেজি সাহিত্য সুশান্ত পালকে আকর্ষণ করতো। তাই তার ইচ্ছে ছিল ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়বেন। কিন্তু বাবা-মার ইচ্ছায় চট্রগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা চুয়েটে ভর্তি পরিক্ষা দেন। পরিক্ষায় দ্বিতীয় হন। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বও কম্পিউটার সাইন্সে পড়াশোনা শুরু করেন।
এরপর একটা সময় ব্যবসা শুরু করেন, নিজের কোচিং সেন্টারও ছিল। কিন্তু বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে তাঁর মধ্যে অনেক হতাশা ছিল। ৪ বছরের মাথায় যখন সব বন্ধুরা পাশ করে চলে যান, যোগ দেন কর্মক্ষেত্রে সুশান্ত পাল তখনও চুয়েটের ছাত্র। শিক্ষাজীবনে পিছিয়ে পড়া এবং দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে কেবল তাকেই নয়, অপমানিত হতে হতো মা-বাবা এবং একমাত্র ভাইকেও। সেই সময় সুশান্ত এতোটাই মূল্যহীন হয়ে পড়েন যে কাউকে ফোন করলেও কেউ রিসিভ করতো না। ডাকা হতো না কোনো গেট টুগেদার বা পার্টিতে।
চুয়েটে প্রতিনিয়তই অপমানিত হতেন বন্ধু ও শিক্ষকদের দ্বারা। এক পর্যায়ে জীবনটাই অসহনীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু হঠাৎ করে চোখের সামনে ভেসে ওঠে মমতাময়ী মায়ের মুখটা। শত প্রতিকূলতার মাঝেও যিনি তাকে সাহস যুগিয়ে গেছেন। সে মায়ের কারণেই জীবনে ফিরে আসেন সুশান্ত পাল। বেঁচে থাকাটাই জীবনের সবচেয়ে বড় স্বার্থকতা বলে মনে করেন তিনি। পরে এক বন্ধুর পরে এক বন্ধুর কথায় রাজি হয়ে বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বিসিএস নিয়ে তার কোন ধারনাই ছিল না। সবার কাছে শুনেছিলেন, এই পরীক্ষাটা বেশ কঠিন। তাই প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ ঘন্টা পড়তেন।
কোচিং, ব্যবসা সবকিছু বন্ধ করে সারাদিন রাত পড়তেন। তবে সুশান্ত পাল এলোপাতাড়ি ভাবে প্রস্তুতি নিতেন না। সবসময় নিজস্ব কিছু টেকনিক অনুসরণ করে প্রস্তুতি নিয়েছেন। ২০১১ সালে ৩০ তম বিসিএস এর রেজাল্ট বের হয়। ঐদিন সুশান্ত পালের জন্মদিন ছিল। কেউ একজন ফোন করে জানায়, তিনি কাস্টমসে প্রথম হয়েছেন। কথাটা বিশ্বাস করতে পারেননি। নিজের কম্পিউটার খুলে বসেন্ কিন্তু পিএসসির ওয়েবসাইটে প্রচন্ড চাপ থাকায় লগইন করতে পারছিলেন না। অনেক কষ্ট করে গুগল থেকে আবার পিডিএফ নামিয়ে ফলাফল দেখা শুরু করেন। সেখানে কাস্টমস ক্যাডারে প্রথমেই দেখতে পান তার ৩০২৬৫৩ রোল নাম্বারটি।
আমাদের পোস্টটি ভালো লাগবে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন এবং কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানাবেন।