সেনা অফিসার মেজর ডালিমের পরিচয়

সেনা অফিসার মেজর ডালিম ১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালের কথা- ডালিমের বয়স তখন ২০ এর মত এত কম বয়সে । তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন পাকিস্তানের বিমান বাহিনীতে। এতেই বোঝা যায় ডালিম কতটা চৌকস ছিলেন। পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে তার পথ চলা খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি। ১৯৬৫ সালে চিরবৈরী পাকিস্তান এবং ভারতের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে। এক পর্যায়ে দুইটি দেশ সম্মুখ লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে।

পাকিস্তান -ভারত লড়াই শুরু হলে, মেজর ডালিম পাকিস্তান বিমান বাহিনীর চাকরির ছেড়ে দিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এখানেও নিজের দক্ষতা এবং যোগ্যতার ছাপ রেখেছিলেন। সফলতার সাথে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে তিনি প্রায় ছয় বছর কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের সম্মুখ বিরোধ শুরু হয়। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি চাকরির সুবাদে পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন। কিন্তু  দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে এক পর্যায়ে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় বিদায় নেন।

পাকিস্তান সেনা থেকে চাকরি ছাড়ার পর তিনি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে তার সক্রিয় অংশ নেওয়া ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব রেখেছিল। তিনি দেখিয়েছিলেন অসাধারণ বীরত্ব ! এই সাহস এবং কৃতিত্বের জন্যই স্বাধীন বাংলাদেশে তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়েছিল।

অবশ্য মেজর ডালিমের জীবনের এই অংশটাই শুধু প্রশংসিত। পরবর্তীতে তিনি দেশের ইতিহাসের সবচাইতে ঘৃণ্য কর্মকান্ডের অংশ হয়ে যান। স্বাধীনতার প্রায় চার বছর পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে শেষ করে দেওয়া হয়। এই পরিকল্পনায় ডালিমের সাথে আরো কয়েকজন বিপদগ্রস্ত কর্মকর্তা সরাসরি জড়িত ছিলেন। ১৫ ই আগস্ট এর এই করুন ঘটনার পর দেশের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছিলেন ডালিম সহ আরো কয়েকজন মেজর।

তাদের ক্ষমতা হস্তক্ষেপে বসেছিলেন খন্দকার মোস্তাক। মেজর ডালিম লাভবান হয়েছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে তাকে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল পদ দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত যারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছেন, সবার সাথেই ডালিমের সুসম্পর্ক দেখা গেছে। ১৯৭৬ সালে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর গণ চিনে তাকে বাংলাদেশের কূটনীতিক হিসেবে প্রেরণ করা হয়। ১৯৮০ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তাকে লন্ডন হাইকমিশনে যুক্ত করা হয়। দুই বছর পর ১৯৮২ সালে তিনি হংকং এর বাংলাদেশ দূতাবাসে নিয়োগ পান।

জলদস্যুদের কবলে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ

ক্যাপটেন আশিক সেনা গৌরবের পুরস্কার পেলেন !

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হেসেনের  গল্প

Leave a Comment