হাওড়া স্টেশনের ১৭০ বছরের ইতিহাস। সময়টা ১৯ শতকের প্রথম ভাগ কলকাতায় ঘাঁটি গেড়ে বসা ব্রিটিশ শাসকরা বুঝতে পারলেন ব্যবসা বাঁচাতে হলে কলকাতা থেকে দিল্লী পর্যন্ত রেল পথ চালু করতেই হবে। কিন্তু রোনাল্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিফেনসন বুঝতে পারলেন কলকাতা থেকে কোনভাবেই রেলপথ পাতা সম্ভব নয়। এর কারণ গঙ্গা নদী। তাই ব্রিটিশরা সিদ্ধান্ত নিলেন, রেলপথ বসবে, কিন্তু সেটা গঙ্গা নদীর ওপারে, হাওড়ায়।
বর্তমান যেখানে হাওড়া স্টেশন। সে সময় গঙ্গার ধারে ওই জায়গায় ছিল একটা অনাথ আর আশ্রম গির্জা। মূলত রোমান ক্যাথলিক অনাথ ছেলেমেয়েদের, আশ্রয় দেওয়া হতো ওই আশ্রমে। ওই আশ্রম এবং গির্জা দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন, পর্তুগিজ মিশনারিররা। কিন্তু সেই সময় আচমকা একটা ভয়ংকর মহামারী দেখা দিল হাওড়ার দিকে। মহামারীর হাত থেকে আশ্রমের শিশুদের বাঁচাতে, সমস্ত শিশু, কর্মী এবং মিশনারিরা পালিয়ে এলেন গঙ্গা পেরিয়ে কলকাতা শহরের দিকে। কলকাতায় এসে তারা নতুন করে আশ্রম আর গির্জা তৈরি করেছিলেন, গঙ্গার ওপারে ওই গির্জা আর আশ্রম ফাকায় পড়ে থাকল।
ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি যখন হাওড়া স্টেশন বানানোর পরিকল্পনা করল তখন পরতুগিজরা ওই জায়গাটা বিক্রি করে দিল ইংরেজদের কাছে। প্রথমদিকে হাওড়া স্টেশন কে নিয়ে মোটেই এত বড় পরিকল্পনা ছিল না ইংরেজদের। মাত্র একটা প্ল্যাটফর্ম, আর একটা লাল ইটের একতলা বাড়ি নিয়েই, আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করে শুরু হয়েছিল বর্তমান হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন। একটা ছোট জানলার ভেতরে একজন লোক বসে থাকতো, সেই লোকটাই টিকিট দিত সবাইকে। তবে তার কোনটাই আজ আর নেই, কিন্তু হাওড়া ষ্টেশনের সেই প্রথম লাইনটা, আজও রয়ে গেছে। বর্তমানে হাওড়া স্টেশনের ১৭ নম্বর লাইনটাই হল আদি হাওড়া স্টেশনের সেই প্রথম লাইন।
আইনজীবী মানজুর আল মতিন এর পরিচয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার ইতিহাস
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল albe hossin