এপ্রিল ফুল কিভাবে এসেছে?

১ এপ্রিল বৈশ্বিক গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তী দিনে ঘটা করে জানিয়ে দেওয়া হয়- এটি তারা ইচ্ছে করেই করছেন। গোটা বিশ্ব বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিলেও, মুসলিমরা তা পারেন না। কেননা, ১৫ শতকের শেষের দিকে প্লেনে মুসলিম  শাসনের অবসান ঘটে রাজা  ফারদিনান্দ ও রানী ইসাবেলার হাত ধরে। অনেকেই মনে করেন, এপ্রিল ফুল নিয়ে মাতামাতি শুধু বর্তমান প্রজন্মই  করছে।

আসল ঘটনা কিন্তু উল্টো। পাকিস্তান আমলে আরো বেশি করে এপ্রিল ফুল উদযাপন করা হতো। তাও কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মত শিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যে এপ্রিল ফুল উদযাপনের রীতি ছিল। ধরা যাক ভোর পাচঁটার দিকে স্কুলের সহকারী হেডমাস্টারকে একজন ছাত্র গিয়ে খবর দিল- রাত দুইটার দিকে প্রধান শিক্ষক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন, অবস্থা খুবই খারাপ।

  এই শুনে সহকারী হেডমাস্টার তাড়াতাড়ি করে হেডমাস্টারের বাড়িতে ছুটলেন। গিয়ে দেখলেন তারাই মতো দুঃসংবাদ পাওয়া আরও ১০ জন শিক্ষক হতাশ হয়ে বসে আছেন। বুঝতে বাকি থাকে না, সবাইকে বোকা বানানো হয়েছে। তৎকালীন সময়ে তথা পাকিস্তান আমলে মোবাইল ফোন না থাকায় এপ্রিল ফুল বানানো সহজ ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার কয়েক দশক পরও এপ্রিল ফুল উদযাপনের রীতি টিকে ছিল। পরে আস্তে আস্তে তা কমে গেছে।

এপ্রিল ফুলের উৎপত্তি হয় ফ্রান্সে। আর সেটা ১৫ শতকের সময়ে, যখন ক্যালেন্ডারের বদল ঘটে। তার আগে পর্যন্ত জুলিয়াস সিজারের নাম অনুসারে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার হয়ে এসেছিল। সেই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঋতুর সঙ্গে মিল রেখে নতুন বছর শুরু হতো  মার্চের শেষে বা এপ্রিলের শুরুর দিকে। কিন্তু পরবর্তীতে ফ্রান্স প্রথম গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহণ করে। যে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পহেলা জানুয়ারি ধরা হয় বছরের প্রথম দিন। কিন্তু ফ্রান্সের এই নতুন পদক্ষেপ প্রাথমিকভাবে সব জায়গায় পৌঁছায়নি।

সব জায়গা পৌঁছাতে বেশ কিছু বছর লেগে যায়। কিন্তু অনেকে আবার সিদ্ধান্ত নেয় তারা জুনিয়র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চলবেন। ফলে পহেলা জানুয়ারির পরিবর্তে অনেকেই আগের মত এপ্রিলের প্রথম দিনে নতুন বছর উদযাপন করতে থাকে। দুই দিনে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন বিষয়টি বেশ হাস্যকর ও মজার খোরাক হয়ে দাঁড়ায়। যারা এরই মধ্যে পহেলা জানুয়ারি নতুন বছর উদযাপন করেছে তারা জুলিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহারকারীদের এপ্রিল ফুলস বলে ডাকতে থাকে।

অনেক ঐতিহাসিকগণ বলে থাকেন, প্রাচীন রোমের সাথে এপ্রিল ফুল বিষয়টি সম্পৃক্ততা রয়েছে।মার্চের শেষের দিকে রোম শহরের দেব- দেবীদের মাথা খ্যাত সাইবেলের অনুসারীরা একটি উৎসব পালন করতেন যার নাম ছিল হিলারিয়া। এর অর্থ আনন্দদায়ক কিছু। এই দিনে মানুষ বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে। অন্যদের সাথে মজায় লিপ্ত হতো। আর সেখান থেকেই এপ্রিল ফুলের শুরুটা হয়।

এদিকে, অনেক ইসলামিক স্কলার এপ্রিল ফুল পালনের বিরোধিতা করেন। কারণ, বিনোদনের উদ্দেশ্যে মিথ্যা বলা কে ইসলাম বৈধতা দেয় না। ধোকা দেওয়ার বিষয়টিও ইসলাম সমর্থন করে না। আর ইসলাম যা সমর্থন করে না, তা নিয়ে উৎসব করাটা অনেক ইসলামিক স্কলার ভালো চোখে দেখেন না। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে এপ্রিল ফুল উদযাপনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। জেনে হোক বা না জেনে, সবার কাছে ১ এপ্রিল মানেই একে অন্যকে বোকা বানানোর দিন।

ড. জাকির নায়েকের পরিচয়

( BUET) বুয়েটের প্রতিষ্ঠাতা নবাব সলিমুল্লাহ এর পরিচয় !

আইনবিদ জনাব খলিলুর রহমান?

Leave a Comment