ওয়াসিম আকরামের ক্রিকেট ক্যারিয়ার

ওয়াসিম আকরাম যার নামের পাশে ১৯৬টি উইকেট। তাকে সুলতান কিংবা কিং বলা যায়। ৯০ দশকের ক্রিকেটপ্রেমীরা জানে- ওয়াসিম আকরাম মানে বিশ্বয় ! বল নতুন হোক কিংবা পুরাতন, দুইদিকেই সুইং করানোর ক্ষমতা ছিল তার। সঙ্গে ছিল দুর্ধর্ষ ইয়কার। ওয়াসিম আকরাম বলকে কথা বলাতে পারতেন। তাকে বলা হয় খেয়ালি জাদুকর। ওয়াসিম আকরাম ১৯৯৩ সালে উইজডেন বর্ষসেরা  ক্রিকেটার নির্বাচিত হন। এছাড়াও উইজডেন দ্বারা  নির্বাচিত গত শতাব্দীর সেরা ওয়ানডে বোলার হিসেবেও নির্বাচিত হন ওয়াসিম।

ছোটবেলায় তিনি নারীর কাছে থাকতেন। রাস্তায় টেনিস বলে ইলেকট্রিক টেপ পেচিয়ে খেলতেন। যাকে বলে টেপ টেনিস। একটা কিছু মনে করে একদিন বল থেকে কিছুটা টেপ তুলে নিয়ে বাড়তি swing করানোর চেষ্টা করেন। চেষ্টা সফল হয়। কিশোর বয়সের সেই শিক্ষাটা পরবর্তীতে কাজে লাগিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। যার নাম হয়েছে রিভার্স সুইং ! ব্যবসায়ী বাবার ছেলে ওয়াসিম আকরামের ইচ্ছা ছিল হয় টেনিস প্লেয়ার হবেন, না হয় চারুকলায় পড়বেন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার চেয়েছেন, তিনি হবেন পেস কিংবদন্তি। তরুণ বয়সে ইমরান খানের বোলিং- এর প্রেমে পড়েন ওয়াসিম। পরে ইমরানের শীষ্য হিসেবেই জাতীয় দলকে সার্ভিস দিয়েছেন। ব্যাটসম্যান হিসেবেও তিনি প্রয়োজনের সময় জ্বলে উঠতেন।

হাজার ১৯৯৬ সালের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩৬৩ বলে ২৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। এমন ইনিংস যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই স্বপ্ন ! ওই ইনিংসে তিনি রেকর্ড বারোটি ছক্কা হাকিয়ে ছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে কোন বেটার এরচেয়ে বেশি ছক্কা হাকাতে পারেনি। ইমরান খান একবার বলেছিলেন, ব্যাট হাতে সিরিয়াস হলে ওয়াসিম ইতিহাসের সেরা অলরাউন্ডার হতে পারতেন। তবে বোলার হিসেবে তিনি যা যা করেছেন তা অনেকে ছুঁয়ে দেখার সাহস করবে না। ওয়াসিম আকরামের আরেকটি বিষয় আড়ালে থেকে যায়। সেটা হল ফিটনেস। ক্রিকেট ইতিহাসে ওয়ানডে আর টেস্ট- দুই  ফরমেটেই ন্যূনতম ৪০০ উইকেট পেয়েছেন এরকম বোলারের সংখ্যা মাত্র দুজন।

একজন ফাস্ট বোলার হিসেবে ১৮ বছর ১১০ দিনের ওয়ানডে ক্যারিয়ার বলে দেয় তার ফিটনেসটা কেমন ছিল। ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি দিন খেলা চালিয়ে যাওয়া ক্রিকেটারদের তালিকায় প্রথম ২০ জনের ভেতরে মাত্র চার জন বোলার। এই চারজন বোলার এর মধ্যে ওয়াসিম আকরামই একমাত্র স্পিনার। বর্তমানে পাকিস্তানের ক্রিকেটে পেস বোলারদের অভাব নেই। কিন্তু আগে এমনটা ছিল না। আগে পেস বলার মানেই সবাই ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবা ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া কে জানতো। ডেনিস লিলি, জেফরি থমসন কিংবা ম্যালকম মার্শাল, সেই সময়ে উপমহাদেশ থেকে কেউ পেস বোলিংয়ে সেরা হয়ে উঠবেন- তা এক প্রকার অসম্ভব ছিল। উপমহাদেশ ছিল স্পিনারদের খনি। আর এখান থেকেই ওয়াসীম আকরামের বিস্ময়কর উত্থান হয়।

অভিনেতা আবুল হায়াতের জীবনের গল্প

Leave a Comment