কোন ব্যক্তি মেমোরি কার্ড আবিষ্কার করেন?….কোন ব্যক্তি মেমোরি কার্ড আবিষ্কার করেন?.. আরও বিস্তারিত পড়ুন প্রতিবেদনে….
মেমোরি কার্ড বহুল ব্যবহৃত একটা ইলেকট্রনিক ডিভাইজ যা হাতে থাকা মোবাইল ফেন থেকে শুরু করে বড় ধরনের কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয়। এটি মুলত প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সেভ করে রাখার একটি বড় মাধ্যম.. আরও বিস্তারিত জানুন….
মেমোরি কার্ড একটি আধুনিক তথ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তি, যার আবিষ্কার ও উন্নয়নের পেছনে একাধিক বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের অবদান রয়েছে। তবে মেমোরি কার্ডের মূল ভিত্তি যে প্রযুক্তির উপর নির্মিত, তা হলো ফ্ল্যাশ মেমোরি। এই ফ্ল্যাশ মেমোরি প্রযুক্তির জনক হিসেবে ফুজিও মাসুওকা (Fujio Masuoka)-কে গণ্য করা হয়। তিনি একজন জাপানি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, যিনি ১৯৮০-এর দশকে টোশিবা কর্পোরেশনে কাজ করার সময় NAND ফ্ল্যাশ মেমোরি উদ্ভাবন করেন।
১৯৮৪ সালে মাসুওকা NAND ফ্ল্যাশ মেমোরির ধারণা উপস্থাপন করেন, যা তুলনামূলকভাবে দ্রুত তথ্য সংরক্ষণ এবং মোছার সুবিধা দেয়। এই প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের মেমোরি কার্ড তৈরি হয়। ১৯৯০-এর দশকে SanDisk, Toshiba ও Panasonic একত্র হয়ে ১৯৯৯ সালে SD (Secure Digital) Card বাজারে নিয়ে আসে, যা আজকের সবচেয়ে জনপ্রিয় মেমোরি কার্ড ফরম্যাট।
মেমোরি কার্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিল ছোট আকারে অধিক পরিমাণ তথ্য সংরক্ষণ করা, যা ক্যামেরা, মোবাইল, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসে ব্যবহৃত হতে পারে। ফুজিও মাসুওকার আবিষ্কৃত প্রযুক্তি এ লক্ষ্য পূরণে বড় ভূমিকা রাখে।
সুতরাং বলা যায়, ফুজিও মাসুওকা সরাসরি মেমোরি কার্ড আবিষ্কার না করলেও, তাঁর উদ্ভাবিত ফ্ল্যাশ মেমোরি প্রযুক্তি মেমোরি কার্ডের ভিত্তি তৈরি করে দেয়। এই প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করেই মেমোরি কার্ড বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তথ্য সংরক্ষণের ধরনই বদলে দেয়।
মেমোরি কার্ড কি?
মেমোরি কার্ড বর্তমান বিশ্বের জনপ্রিয় একটি ইলেকট্রনিক স্পেচ… যেখানে ডিভাইজের ভিবিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ফাইল ইত্যাদি জমা রাখা হয়…
মেমোরি কার্ড একটি ছোট, পোর্টেবল স্টোরেজ ডিভাইস যা ডিজিটাল ডেটা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত ফ্ল্যাশ মেমোরি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি, যার ফলে এটি বিদ্যুৎ ছাড়াও ডেটা ধরে রাখতে পারে। মেমোরি কার্ড সাধারণত ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, গেম কনসোল ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়।
বিভিন্ন ধরনের মেমোরি কার্ড রয়েছে, যেমন SD (Secure Digital) Card, microSD Card, CompactFlash, এবং Memory Stick। এর মধ্যে SD ও microSD কার্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। মেমোরি কার্ডের স্টোরেজ ক্ষমতা বিভিন্ন রকম হতে পারে—২ জিবি থেকে শুরু করে ১ টেরাবাইট বা তার বেশি পর্যন্ত।
মেমোরি কার্ডের সুবিধা হলো এটি ছোট আকৃতির, পুনঃব্যবহারযোগ্য এবং সহজে বহনযোগ্য। এতে ছবি, ভিডিও, গান, অ্যাপ্লিকেশনসহ বিভিন্ন ধরণের ফাইল সংরক্ষণ করা যায়। এটি দ্রুত ডেটা পড়া ও লেখার ক্ষমতাও প্রদান করে, যা আধুনিক প্রযুক্তির জন্য খুবই উপযোগী।
মেমোরি কিভাবে তৈরি হয়?
মেমোরি কার্ড বর্তমান বিশ্বের জনপ্রিয় একটি ইলেকট্রনিক স্পেচ… যেখানে ডিভাইজের ভিবিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ফাইল ইত্যাদি জমা রাখা হয়…
মেমোরি কার্ড তৈরি করার প্রক্রিয়া অনেক ধাপে সম্পন্ন হয় এবং এতে উন্নত প্রযুক্তি ও মাইক্রোইলেকট্রনিক্স ব্যবহৃত হয়। নিচে সহজভাবে ধাপগুলো ব্যাখ্যা করা হলো:
১। ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপ:
মেমোরি কার্ডের মূল অংশ হলো NAND ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপ। এটি সিলিকন ওয়েফার (silicon wafer) থেকে তৈরি করা হয়।
- বিশেষ ধরণের ফটোলিথোগ্রাফি পদ্ধতি ব্যবহার করে সিলিকন চিপে সার্কিট ডিজাইন করা হয়।
- প্রতিটি চিপে কোটি কোটি ট্রানজিস্টর থাকে যা তথ্য সংরক্ষণ করে।
২। কন্ট্রোলার চিপ:
ফ্ল্যাশ চিপের সঙ্গে একটি মেমোরি কন্ট্রোলার যুক্ত করা হয়, যা তথ্য পড়া, লেখা ও মুছার কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।
৩। (PCB) বসানো
চিপগুলো একটি মাইক্রো সার্কিট বোর্ডে (PCB) স্থাপন করা হয়। এটি মেমোরি কার্ডের ভেতরের কাঠামো।
৪। (Casing) তৈরি
এরপর মেমোরি কার্ডকে একটি প্লাস্টিক বা রাবারের কেসিংয়ে আবদ্ধ করা হয়, যা একে বাহ্যিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
৫। পরিক্ষা:
প্রতিটি মেমোরি কার্ডকে পরীক্ষা করে দেখা হয় সেটি ঠিকভাবে ডেটা সংরক্ষণ করতে পারে কিনা। পরীক্ষার পর মানসম্পন্ন কার্ডগুলো প্যাকেজিংয়ের জন্য পাঠানো হয়।
কি ধরনে ডিভাইজে এটি ব্যবহার করা হয়?
আমরা আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় ডিভাইজে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করে থাকি…
মেমোরি কার্ড বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসে ব্যবহার করা যায়, যেগুলোর ডেটা সংরক্ষণের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে রয়েছেমোবাইল ফোন, ডিজিটাল ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, গেম কনসোল (যেমন PlayStation, Nintendo), ড্রোন, সিকিউরিটি ক্যামেরাএবং কিছু মিউজিক প্লেয়ার। এসব ডিভাইসে ছবি, ভিডিও, অ্যাপস বা অন্যান্য ফাইল সংরক্ষণের জন্য মেমোরি কার্ড ব্যবহৃত হয়।
বিশেষ উপসংহার:
মেমোরি কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও জটিল। এতে ন্যানোস্কেল প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর ইঞ্জিনিয়ারিং এবং উন্নত মেশিন ব্যবহার করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় তৈরি কার্ডগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তথ্য সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
আমাদের পোস্টে ভাষাগত ভূল থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং এই রকম প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আমারদের ওয়েবসাইটি ফলো করুন। আমি মো: আলভি হোসাইন।