নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুলের সাফল্য…নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুলের সাফল্য এ বছরে বোডের প্রথম স্থান অধিকার করেছে….
এই স্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়েছে ৩২০ জন। এ প্লাস পেয়েছে ৩২০ জন। শুধু এইবারই নয় প্রত্যেকবার ঢাকা শহরের বড় বড় সব স্কুলকে পেছনে ফেলেছে নরসিংদীর এই স্কুল। নাম- নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল এন্ড হোমস। নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল ৩১৭ জন, বাকি তিনজন ছিলেন ব্যবসা শিক্ষা শাখায়।
তবে ফলাফল কারো হেরফের হয়নি। সবাই একসাথে ১০০ তে ১০০ । কিন্তু কেউ যদি নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুলের এমন সাফল্যে হতভাগ হয়ে যায়, সেটা তার ভাবনার ভুল ধারণা। কারণ স্কুলটির জন্য এমন অর্জন নতুন কিছু নয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসিতে টানা শতভাগ পাস সহ ফলাফলের ভিত্তিতে প্রায় প্রতি বছরই বোর্ডের দেশ সেরা আর স্থান দখল করে আসছে স্কুলটি।
এর পূর্বে ২০১৫, ২০১৭, ও ২০২২ সালে শতভাগ জিপিএ ৫ পেয়ে দেশ সেরা ফলাফল অর্জন করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। ২০২৪ এসএসসি পরীক্ষায় এই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২৯৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগপাস সহ ২৯৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ এবং বাকি একজন জিপিএ ৪.৯৪ পেয়েছিল। ২০২৩ সালে ২৭৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৫ সহ ২৭০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল।
এছাড়াও ২০২২ সালে ২৬৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস সহ ২৬৬ জনের জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০২১ সালে ২৪৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতকরা শতভাগ পাশ সহ ৩৩৭ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০২০ সালে ২১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাশ সহ ২০০ জন পেয়েছিল জিপিএ ৫।
এর আরো পূর্বে লক্ষ করলে স্কুলটির ফলাফল দেখা যায় সাফল্যের শীর্ষে। ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় এই স্কুল থেকে ১৬৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ ৫ পেয়েছিল।
আমাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, স্কুলটি কিভাবে এতটা ধারাবাহিকভাবে চমকপ্রদক ফলাফল উপহার দিচ্ছে। এর উত্তর আছে নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুলের নিয়ম শৃঙ্খলা ও শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আপ্রাণ প্রচেষ্টা। ১৬৪ জন শিক্ষক- শিক্ষিকা সার্বিক তত্ত্বাবধানে স্কুলটি কঠোর শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়। বর্তমানে স্কুলটির শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ৫৬০০ জন। স্কুলটিতে নিয়মিত দুর্বল শিক্ষার্থীদের তদারকি করা এবং তার দুর্বল জায়গা গুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য শিক্ষকরা সময় দেন।
আরও পড়ুনএনআইডি সংশোধন করতে কি কি লাগে?
প্রতি সপ্তাহে একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাসায় খোঁজ নেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। এছাড়া ক্লাস টেস্ট, মডেল টেস্ট সহ, বিভিন্ন পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার মনোন্নয়ন নিশ্চিতকরণে শিক্ষকরা অত্যন্ত সচেতন। এর ফলে এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের হার মান শুধু দ্রুত উন্নত হচ্ছে। একটি বিদ্যালয়ে ভালো ফলাফলের মূল মন্ত্র হচ্ছে বিদ্যালয় এর পরিচালনা। শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সমন্বয়।
নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুলে এর সবই আছে। স্কুলটির সাফল্যের পেছনে আছে এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও থার্র্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির মোল্লা নিজেও। তিনি সবসময় চেয়েছেন সুশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানব সম্পদে পরিণত হোক। যাদের সমাজের সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত বেকার তৈরি না হয়।
এই লক্ষ্যে নরসিংদীতে মানসম্মত শিক্ষা দানের অঙ্গীকার নিয়ে ২০০৮ সালে শহরের ভেলানগর এলাকায় তিনি এবং তার স্ত্রী মিসেস নাসিমা বেগমের নামে যৌথভাবে নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল এন্ড হোমস প্রতিষ্ঠা করেন।
আবদুল কাদির মোল্লার মমসয়োপযোগী সঠিক দিকনির্দেশনা আর একঝাক তরুণ শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রমে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ফুলটি আজ দেশের সেরা স্কুলে পরিণত হয়েছে। এর মাঝে ছিল সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা, মানসম্মত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো আর হার না মানা মানসিকতা।