বিশ্বনবি হযরত মুহাম্মদ (স) অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন ছিলেন না, কিন্তু মহাজ্ঞানী ছিলেন। তিনি কারো কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা গ্রহণ করেননি। তাঁর একমাত্র শিক্ষক হলেন মহান আল্লাহ তায়ালা। ওহির মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা রাসূলকে (সা) সব বিষয়ের জ্ঞানদান করেছেন। সে জন্য রাসূলুল্লাহ (স) শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সম্যক অবহিত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (স) দারুল আরকাম নামে একটি শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠা করেন। মক্কার সাফা পাহাড়েরর পাদদেশে সাহাবি হযরত আরকাম (রা) এর বাড়িতে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দারুল আরকামের প্রথম শিক্ষক ছিলেন রাসূল (স)। তিনি সেখানে মুসলিমদের প্রয়োজনীয় হুকুম -আহকাম শেখাতেন। রাসূলুল্লাহ (স)-এর নিজের বাসগৃহটিও বিদ্যালয়ের রূপান্তর করেছিল। সবার জন্য এবং সবসময় এ বাড়ির দরজা উন্মুক্ত ছিলো। রাসুলুল্লাহ (স)-এর সাথে উম্মুলমুমিনীনগণও শিক্ষাদানে আত্মনিয়োগ করেছিলো। যে জন্য রাসূলের (স) ইন্তেকালের পর হযরত আয়েশা, হাফসা, উম্মে সালমা প্রমুখ নবিপত্নীর উদ্যোগে নবিগৃহ নারী শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।
বদর যুদ্ধে বন্দি মুশরিকদের মুক্তিপণ নির্ধারণ করে রাসূলুল্লাহ (স) শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে একটি অভিনব উদ্যোগ নেন। তিনি প্রতিজন শিক্ষিত বন্দিকে তিনজন মুসলমানকে জ্ঞানদান করার শর্তে মুক্তি প্রদান করেন। মদিনার মসজিদে নববির নির্মাণ সমাপ্ত হলে মহানবি (স) মসজিদের বারান্দায় একটি আবাসিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে শিক্ষার্থীরা সবসময় অবস্থান করে রাসূলুল্লাহ (স)-এর কাছ থেকে জ্ঞান অর্জনে আত্ননিয়োগ করেন। এ বিদ্যালয়টি সুফফা এবং এর শিক্ষার্থীরা আহলি সুফফা নামে পরিচিত। মসজিদে নববিতে মহানবি (স) নিজে বিভিন্ন শিক্ষার আসর পরিচালনা করতেন। সাধারণভাবে তিনি শিক্ষাগ্রহণ ও প্রদানের জন্য ব্যাপক উতসাহ দিতেন। যার ফলে একটি অশিক্ষিত জাতিকে সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষিত জাতিতে পরিণত করতে পেরেছিলেন।