বাংলাদেশ সামরিক শক্তিতে কতটা উন্নত?….বাংলাদেশ সামরিক শক্তিতে কতটা উন্নত?….
স্বাধীনতার ৫৫ বছর পরও বাংলাদেশের জল, স্থল ও আকাশ পথের শক্তি তেমন বাড়েনি। সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান সারা বিশ্বের মধ্যে 37 তম। কিন্তু বাংলাদেশ চাইলে এই অবস্থানটা ১০ বা ১৫ এর ভেতর নেওয়া সম্ভব।

শুনে হয়তো অবাস্তব মনে হতে পারে কিন্তু সত্যি,,, সঠিক পরিকল্পনা আর সঠিক নির্দেশনা আর নেতৃত্ব এই সবকিছু থাকলে বিষয়টা খুব বেশি কঠিন না। কিন্তু বাংলাদেশ কিভাবে যুদ্ধ ক্ষেত্রে সামরিক শক্তিতে শক্তিশালী ও উন্নত হবে?
সামরিক শক্তিতে জোর দিতে হলে বাংলাদেশকে প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়াতে হবে। প্রতিরক্ষা খাতের ব্যয়ে প্রতিবেশী ভারতের স্থান বিশ্বের তৃতীয়। এর প্রথম স্থানে রয়েছে আমেরিকা ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন।
অর্থনৈতিক অবস্থা এরকম না হলেও এ লড়াই বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে আছে বলা যায়। 2025 সালে প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশের বরাদ্দ মোট বাজেটের মাত্র পাঁচ দশমিক ৫.১৫% ! তাই কিছুই সীমাবদ্ধতা নিয়ে হলেও বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাজেটে যতটা সম্ভব বাড়াতে হবে।
সামরিক শক্তিতে উন্নত হতে হলে, সামরিক সরঞ্জাম বৃদ্ধি করা দরকার। বিশেষ করে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে এখন ২১২ টি বিমান আছে। যেখানে যুদ্ধ বিমান রয়েছে ৪৪ টি।
আরও পড়ুন.. http://শহীদ আবু সাইদের বেড়ে ওঠার গল্প ও তার জীবনি !
এদের মধ্যে চীনের নির্মিত এফ সেভেন বিমান আছে ৩৬ টি। এই মডেল গুলো বেশ পুরনো। এছাড়া সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি ৮ টি মিগ-টোয়েন্টি নাইনও বর্তমান যুগের জন্য ততটা কার্যকরী নয়।
ভারতের মতো ফ্রান্সের রাফায়েল বিমান কেনা সম্ভব না হলেও, বাংলাদেশের জন্য বিকল্প হতে পারে চীনের বাজার। আধুনিক বিমান তৈরিতে চীনারা তাদের দক্ষতা দেখিয়েছেন। ছেন এছাড়া তুরস্কের তৈরি অত্যাধুনিক গ্রহণযুক্ত করার মাধ্যমেও শক্তিশালী হতে পারে।
বিমান বাহিনীর পাশাপাশি দেশের নৌ ও সেনাবাহিনীকেও আধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর কাছে সাবমেরিন রয়েছে মাত্র দুটি। এছাড়া নওজেন্ড রয়েছে মোট ১১৭ টি। টি এর মধ্যে সাতটি ফিগেট বা রণতবী বিচার সংখ্যায় খুব অল্প।
সাবমেরিন ও আধুনিক যুদ্ধ জাহাজ বৃদ্ধি করতে পারলে জলভাগেও বাংলাদেশের আগ পর্যন্ত বাড়বে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বেশি দক্ষ ও সাহসী হলেও তাদের আধুনিক সামরিক সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে ৩২০ টি ট্যাংক আছে।
এদের মধ্যে অন্তত ২৮১ টি চিনের তৈরি। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চীন থেকে সরঞ্জামগুলো এনে এগুলোকে আধুনিকায়ান করা হলেও নতুন কোন সংযুক্তি দেওয়া হয়নি।
যত দ্রুত সম্ভব সামরিক থাকে আধুনিকতার ছোঁয়া রাখতে হবে । সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশকে উন্নত করতে হলে আরো একটা দিকে বেশ ভালোভাবে খেয়াল রাখা দরকার রাখতে হয় সেটা হল নিজেদের অভ্যন্তরে সামরিক সরঞ্জামের উৎপাদন বাড়ানো।
পরা শক্তিধর দেশগুলোও সেটাই করে। তারা সামরিক সরঞ্জাম আমদানির পাশাপাশি নিজেদের দেশে উৎপাদন করে চাহিদা অনুযায়ী যোগান দেয়। ১৯৬৭ সালে চীনের সহায়তায় ঢাকার অভ্যন্তরে গাজীপুরে একটি অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। তারপরের বছর চিনা কারিগরি দল কারখানাটিকে পুনরুজ্জীবিত করে এবং আরো এক বছর পর অর্থাৎ ১৯৭৭ সাল থেকে কারখানাটি নিয়মিত উৎপাদনের জন্য চালু হয়।
বর্তমানে এখানে বেশ সরঞ্জাম তৈরি হলেও এর কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ আসে চীন থেকে। এরকম ফ্যাক্টরি সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করতে পারলে দেশের সামরিক সক্ষমতা ও বৃদ্ধি পাবে।
এরপর যে বিষয়টা মাথার রাখতে হবে, সেটা হলো পরাশক্তিধর দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের মাত্রা বাড়ানো। একটি দেশের দিকে ঝুঁকে না গিয়ে সবার সাথে সমতার ভিত্তিতে সম্পর্কের দিকে জোর দিতে হবে।
এর জন্য সবচেয়ে উত্তম উদাহরণ হল তুরস্ক। তুরস্কের সাথে অধিকাংশ পার্শ্ববর্তী ভাবসামাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ফলে সামরিক দিক থেকে তারা বেশ লাভবান ও শক্তিশালীও হয়েছে। বাংলাদেশেও তুরস্ককে অনুসরণ করতে পারলে সামরিক শক্তিতে এক দিকে উন্নতি করা সম্ভব।