স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরী, মাত্র ২০ হাজার টাকা মূলধনে সাধারণ সর্দি- কাশির সিরাপ দিয়ে পথচলা শুরু হয়েছিল। সেই স্কয়ার আজ বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প গোষ্ঠী। বর্তমানে তাদের বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা। দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও কারখানা করেছে গ্রুপটি। ওষুধ দিয়ে শুরু করলেও স্কয়ার গ্রুপের ব্যবসা বর্তমানে অনেকগুলো খাতে বিস্তৃত। তাদের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০ টি, কর্মী বাহিনী ৫৫ হাজারের বেশি। বর্তমানে বিশ্বের ৪২ টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে square। এগুলোর মধ্যে এশিয়ার ১৯টি দেশ, আফ্রিকার ১৩ টি, ওশেনিয়া অঞ্চলে ৩টি, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার ৬ টি এবং যুক্তরাজ্যের বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ রপ্তানি করা হচ্ছে।
স্কয়ার গ্রুপ- এর প্রতিষ্ঠাতা দেশের বিখ্যাত শিল্পপতি স্যামসন এইচ চৌধুরী। তার হাত ধরেই প্রতিষ্ঠানটি এত দূরে এসেছে। তিনি ইন্তেকাল করলেও তার আদর্শেই তার সন্তানেরা স্কয়ার গ্রুপ কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। স্যামসন এইচ চৌধুরী ১৯৫২ সালে ডাক বিভাগের চাকরির ছেড়ে বাবার ফার্মেসিতে সময় দিতে শুরু করেন। বছর চারেক পর বাবার কাছ থেকে টাকা ধার করে পাবনার আতাইকুলাতে ইয়াকুব অ্যান্ড সন্স নামে ছোট ওষুধ কোম্পানি করেন তিনি। এরপর সেটিকে বড় করতে তিন বন্ধুকে সঙ্গে নেন। কাজী হারুনুর রশিদ, পি কে সাহা ও রাধাবৃন্দ রায়কে নিয়ে ১৯৫৮ সালে স্কয়ার নামে ওষুধ কোম্পানি করেন। তখন তাদের মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার টাকা। চারজনের সমান বিনিয়োগ বলে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় স্কয়ার।
১৯৭১ সালে রাধাবিন্দ রায় নিজের মালিকানার অংশ ছেড়ে দেন।স্বাধীনতার সংগ্রামের ওই সময়ে পাবনায় স্কয়ারের কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। নিরাপত্তার খাতিরে গ্রামের দিকে চলে যায় স্যামসন এইচ চৌধুরীর পরিবার।তখন কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী কৌশল করে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে কারখানা টি নিজেদের বলে দাবি করে। তাদের কৌশলের কারণেই কারখানার কোন ক্ষতি হয়নি। চার বন্ধু মিলে কোম্পানিটি গড়ে তুললেও নেতৃত্বে ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। শুরুতে পাবনায় নিজ বাড়ির কাছেই কোম্পানির কারখানা করা হয়। প্রথমদিকে স্কয়ার ফার্মা সিরাপ জাতীয় ঔষধ তৈরি করত। ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে কোম্পানির পরিসর বড় হতে থাকে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সাল ছিল স্কয়ার এর জন্য টার্নিং পয়েন্ট। ওই বছর কয়েকটি বিদেশী কোম্পানির সঙ্গে স্কয়ারের চুক্তি হয়। এরপর স্কয়ারকে সম্পূর্ণ আধুনিক রূপ দেন স্যামসন চৌধুরী। আশি দশকে দেশের অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠিত দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে নেয় স্কয়ার।