ফেনি নোয়াখালী এবং কুমিল্লা সহ বিভিন্ন জেলার আকস্মিক বন্যায় দেশের মানুষ যেভাবে এক হয়ে কাজ করছে- তা চোখের জন্য স্বস্তির।বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে ভিআইপি রাও। ওমরার জন্য জমিয়ে রাখা টাকা দান করেছেন ছোট্ট এক শিশু। খয়েরি কাপড়ে বন্যার্তদের সহযোগিতায় নেমে এসেছে -বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। বিপদের এইসব মুহূর্তে যে যেভাবে পারছে সেই ভাবেই দেশের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে সম্প্রতি সরকার পতনের মতো ঘটনাও ঘটে গেছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু করেছিল সেটাই শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠে জনতার মুক্তির আনন্দ।
শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সেই আন্দোলনে সমাজের সকল শ্রেণীর পেশার মানুষ যোগ দিয়েছিল। নির্বিচারে প্রাণহানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল সারা দেশের জনতা। ছাত্রসমাজের সাথে একাত্মতা জানিয়ে রাজপথে নেমেছিল অভিভাবক, শিক্ষক বুদ্ধিজীবী এবং সেলিব্রেটিরা। প্রতিবাদ জানিয়েছিল রিকশা চালকরাও। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য দেওয়া একজন রিকশাচালকের স্যালুট তো রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। অনেক রিকশাওয়ালা ভাড়া ছাড়া ছাত্রদের সেবা দিয়েছেন। ঢাকা মেডিকেলের ছুটেছে, বিনিময়ে কোন ভাড়া নেননি।
পরবর্তীতে সরকারের পতনের এক দফা দাবিতেও সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। এক পর্যায়ে চাপে পড়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরই শুরু হয়েছে রাষ্ট্র মেরামতের কাজ। তবে প্রথমেই বিভিন্ন বাধা বিপত্তি নেমে এসেছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ায় দেশের নানা স্থানে অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ে। সাময়িক এই বিশৃঙ্খলাও জনগণ এক হয়ে শক্তভাবে প্রতিরোধ করেছে। দিন রাত এক করে নিরাপত্তার কাজ করেছে। শহরের অলিতে গলিতে চেকপোস্ট বসিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত পাহাড়ার দায়িত্ব পালন করেছেন। পাহারা দিতে গিয়ে রান্নাবান্না এমনকি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন হয়েছে।
বাঙালির এই ঐক্যবদ্ধতার জন্যই আজ আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। একতাই বল একতাই শক্তি।ো