দয়াল চন্দ্র বর্মন Dayal Chandra

দয়াল চন্দ্র বর্মনের বাড়ি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায়। তাঁর বাবা পুলিন চন্দ্র  বর্মন পেশায় একজন কৃষক। ছেলেকে নিয়েও খুব বেশি প্রত্যাশা ছিল না পুলিন চন্দ্রের। ছেলের চিকিৎসক, প্রকৌশল বা বড় চাকরিজীবী হোক- এমনটাও চাইতেন না তিনি। বরং তার চাওয়াটা ছিল খুব সরল। তিনি চাইতেন, দয়াল যেন ইংরেজিতে সুন্দর করে কথা বলতে পারে। তাই ছেলেকে সঙ্গে করে ফসল বোনতে বোনতে এক ফাকে ইংরেজি শেখার স্বপ্নটাও বুনে দিয়েছিলেন। বন্ধুরা যখন প্রাইভেট পড়ায় ব্যস্ত, দয়াল তখন ব্যস্ত ছিলেন ইংরেজির ভিত্তিটাকে আরও মজবুত করার কাজে।

দয়াল তখন পঞ্চগড়ের বিষ্ণুপ্রসাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তেন। কিন্তু পাশের গ্রামের প্রামানিক পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এর প্রধান শিক্ষক মোঃ আজগর আলীর ইংরেজি পড়ানোটা বেশি ভালো লাগতো দয়ালের। তাই সে শিক্ষকের তত্ত্বাবধানেই চলত দয়ালের ইংরেজি চর্চা। মাধ্যমিক পেরোনোর পর তার শিক্ষাজীবন কিছুটা এলোমেলো হয়ে যায়। দয়ালের স্বজনদের অনেকেই ভারতে থাকে। পরিবার চাইছিল, সেও যেন ভারতে গিয়ে উচ্চশিক্ষা নেন। কিন্তু তার ইচ্ছে ছিল, দেশে কিছু একটা করবেন। এই ইচ্ছায় একসময় পড়ালেখাই বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর প্রায় দুই বছর একরকম হতাশা কেটেছে দয়ালের। তবে করোনার ঘরবন্দী জীবন, তার নিজের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সে সময় নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ইউটিউবে বিভিন্ন অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তাদের ভিডিও দেখতেন তিনি। বেশিরভাগ ভিডিওর ভাষা ছিল ইংরেজি। দয়ালের ইংরেজির ভিতটা যেহুতু মজবুত তাই কথা বুঝতে সমস্যা হতো না। এরপরে ভিডিও দেখে দেখে নিজেও ইংরেজি বলার চেষ্টা করতে থাকেন তিনি। এক সময় তার মনে হল, ইংরেজিটা ভালোই পড়তে পারছেন তিনি। এরপর ফোনে নিজের ভিডিও ধারণ করেন। ভুলগুলো শোধরানোর চেষ্টা শুরু করেন। এর মধ্যে যুক্ত হন অনলাইনে ইংরেজি চর্চার প্ল্যাটফর্ম সার্চ  ইংলিশ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে। সেখানে তিনি দেখেন, গ্রুপের অনেকেই ইংরেজিতে কথা বলার ভিডিও পোস্ট করেছেন। 

অন্যদের ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে দয়ালু নিজের ভিডিও সেই গ্রুপে আপলোড করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে মানুষের প্রশংসা পেয়ে বড় হতে থাকে তার চিন্তার পরিসর। উচ্চারণ আর বলার ধরনে পরিবর্তন আনতে আরও বেশি বেশি ইংরেজি শুনতে শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি চলতে থাকে ফেসবুকে নিজের ভিডিও আপলোড কাজ। এদিকে টেন মিনিট স্কুল এর সাথেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে দয়ালের। টেন মিনিট স্কুলের ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ এর ক্লাবের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। তারা আয়োজন করেছিলেন, স্পোকেন ইংলিশ  চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জে দেশের হাজারো প্রতিযোগীর মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন দয়াল। এই অর্জন তাকে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করেছিল।

যমুনা টিভি কেন জনপ্রিয়তার  শীর্ষে

মাত্র ২১ বছর বয়সেই ব্যারিস্টার হয়েছেন শান।

Leave a Comment