Mr Beast ইউটিউব এর রাজা
ইউটিউব এর রাজা Mr Beast ! জনপ্রিয় এ প্ল্যাটফর্মের এখন সবচেয়ে বেশি সাবস্ক্রাইবার তার। পেছনে ফেলেছেন ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেল T-Series কে। বর্তমানে Mr Beast youtube চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ২৭ কোটি। সেখানে টি-সিরিজের সাবস্ক্রাইবার এর সংখ্যা ২৬ কোটি ৬ লাখ। ২০২৪ সালের ২ জুন, টুইটার একাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ অর্জনের কথা নিশ্চিত করেছেন মিস্টার বিস্ট নিজেই। মিস্টার বিস্ট এর এমন সাফল্যে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন টেসলা-র মালিক এলন মাস্ক। মিস্টার বিস্ট এর আসল নাম জিমি ডোনাডসন। ২৬ বছর বয়সী এই যুবক নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এখন পর্যন্ত ৭০০ -র বেশি ।ভিডিও আপলোড করেছেন
অনেক ইউটিউবারদের কাছে লাখ লাখ ভিউই স্বপ্নের মত। তবে মিস্টার বিস্ট- এর ভিডিওগুলো কোটি কোটি ভিউ হয়। যেমন বড় তার চ্যানেলের পরিচিতি, তেমনি বড় তার আয়ের পরিধি। মিস্টার বিস্ট ইউটিউব চ্যানেল থেকে, ২০২১ সালে জিমি ডোনাডসন আয় করেন ৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৬৩ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে ইউটিউব এর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আয়ের রেকর্ড গড়েন তিনি। এখন তো এই প্লাটফর্ম থেকে সব থেকে বেশি আয় করা ইউটিউবারদের তালিকায় এই তরুণের নাম উপরের দিকেই থাকে।
মজার ব্যাপার হলো, এত এত জনপ্রিয়তা যার তিনি কিন্তু ইউটিউবার হতে চাননি। তিনি হতে চেয়েছিলেন একজন বেইসবল খেলোয়াড়। কিন্তু অসুখের কারণে থমকে গিয়েছিল তার ক্যারিয়ার। এরপরে ইউটিউবমুখী হন তিনি। ২০১২ সালের মাত্র ১৩ বছর বয়স থেকে ভিডিও বানানো শুরু করেন। একজন ভালো শিক্ষার্থীর মত ভাইরাল হওয়ার সব কৌশল দ্রুত শিখে নেন জিমি। youtube এলগরিদম বুঝতে জীবনের সব স্বাদ-আল্লাদ থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন তিনি। তার সাধন বৃথা হয়নি! মাঝপথে কলেজ ছেড়ে দেওয়ার কারণে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল তাকে।
ঠিক ওই সময় প্রথমবার একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি হয় জিমির। গৃহহীনকে দশ হাজার ডলার দান- শিরোনামে ভিডিও করে ওই অর্থ সত্যি সত্যি এক অসহায় কে দিয়ে দেন তিনি। অনেকেই বলেন, জিমি খুব একটা মজার মানুষ নন কিংবা তিনি খুব গুছিয়ে কথা বলতে পারেন না। তবে তার অনুসারীরা এসব নিয়ে ভাবেন না। তার চ্যানেলের অধিকাংশ অনুসারী শিশু ও কিশোর শ্রেণীর। ইউটিউবে কোন ধরনের ভিডিও চলবে, কি ধরনের কনটেন্ট দিলে তা ভাইরাল হবে- জিমি এটা ভালো করেই জানেন। তরুণদের নজর কারে এমন কনটেন্টই বেশি বেশি আপলোড করেন তিনি।
তার ভিডিও গুলোতে থাকে নাটকীয় আবেশ যা দেখতে স্বপ্নের মত মনে হয়। এ কারণেই অনুসারীরা জিমির ভিডিও দেখেন। জিমি ডোনাডসন আমেরিকার উত্তর ক্যারোলিনার গ্রিনভিল শহড়ে বড় হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও একটা সময় ক্যারিয়ারে মনোযোগী হতে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। এরপর পুরোপুরি youtube এর কন্টেন্ট নিয়ে কাজ শুরু করেন। একবার তিনি তার মাকে বলেছিলেন, হয় তিনি ইউটিউবে কাজ করবেন আর না হয় দরিদ্র হয়ে বেঁচে থাকবেন। এমন অদম্য ইচ্ছা শক্তি যার, তাকে ঠেকানোর সাধ্য কার?
তবে তার পথচলাটা একেবারেও সহজ ছিল না। প্রথমদিকে অন্য ইউটিউবারদের মতো তাকেও সময় এবং শ্রম দিতে হয়েছে। নিজেকে পরিচিত করে তুলতে এবং মানুষের নজরে আসতেও বেশ সময় লেগেছে। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকেই দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করে। মিস্টার বিস্ট চ্যানেলের ভিডিওগুলো ভাইরাল হতে শুরু করে। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে আসতে হয়নি। এখন তো পৌঁছেছেন সাফল্যের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। ইউটিউবিং- এর পাশাপাশি মানবিক কাজেও দেখা যায় তাকে।
মিস্টার বিস্ট অর্থাৎ জিমি ডোনান্ডসন তার আয় করা অর্থ দিয়ে ১ হাজার অন্ধ মানুষের চোখের চিকিৎসার ব্যয় বহন করেছেন। এই মানুষের অর্থের অভাবে সার্জারি করতে পারছিলেন না। শুধু চিকিৎসার খরচই নয়, তিনি তাদের অর্থ সহায়তাও করেছেন। মিস্টার বিস্ট ছাড়াও জিমি ডোনাল্ডসনের কয়েক মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবারসহ আরো কয়েকটি চ্যানেল রয়েছে। এছাড়া তার একটি লাইসেন্সকৃত দাতব্য সংস্থা রয়েছে যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অসহায়দের খাদ্য সহায়তা করে। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার জন্য তিনি নানা সামাজিক কাজ করে থাকেন। এভাবেই ইউটিউব এবং মানবিক কাজে একাধারে এগিয়ে যাচ্ছে মিস্টার বিস্ট।
RanR : সিনেমাপ্রেমী এক ইউটিউবারের গল্প..