টানা সাতবার বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফিনল্যান্ড। প্রশ্ন হল ফিনল্যান্ডে এত সুখ কেন?
ফিনল্যান্ডের মানুষ বিশ্বাস করেন, সুখ অন্যকে দেখানোর বিষয় নয় তারা শো-অফ বা লোক দেখানোয় বিশ্বাসী নয়। এ কারণেই ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলথিং এর রাস্তায় দামি গাড়ি খুব একটা দেখা যায় না। এমনকি বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সিইওরাও সাদামাটা ভলভো বা ভক্সভাগন চালান।
অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করা মানুষের স্বাভাবিক স্বভাব। এই তুলনা অনেক সময় আমাদের মনের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ফিনল্যান্ডের বাসিন্দারা এসব এড়িয়ে চলেন। ফিনল্যান্ডের মানুষ বিশ্বাস করে, বাধাবিপত্তি জীবনেরই অংশ। কী নেই, সেদিকে নজর না দিয়ে হাতে কী আছে -তা নিয়েই ফিনিশরা চিন্তা করে।
ফিনল্যান্ডের প্রতিটি শিশু আনন্দের সঙ্গে বেড়ে ওঠে। দেশটির শিক্ষাব্যবস্থায় বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া বাধ্যতা মূলক নয়। আর স্কুলে যেতে হলেও তাদের কোনো পরিক্ষা দিতে হয় না। স্কুলে গিয়ে বাচ্চারা খেলাধুঁলা করে সময় কাটায়। আপনি ভাবতে পারেন, তাদের শিক্ষাব্যবস্থায় হয়তো ত্রুটি রয়েছে আসলে তা না। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমেরিকা ব্রিটেনকেও অনেকক্ষেত্রে হার মানায় ফিনল্যান্ড। সবচেয়ে অবাক করার মত বিষয় হলো, দেশটির বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনা বেতনে পড়া যায়।
ফিনল্যান্ডের প্রচলিত একটি প্রবাদ হলো- সুখ কেউ রুপার থালায় সাজিয়ে আপনার সামনে হাজির করবে না, আপনার জীবনের সুখের দায়িত্ব আপনারই। তারা একে অন্যকে সাহায্য করার ব্যাপারে বেশ উদার। তাদের জনপ্রিয় খেলা আইস হকি। আইস হকিতে আপনি যতই স্কোর করতে চান না কেন, যদি সতীর্থরা আপনাকে পাস না দেয় আপনি গোলের দেখা পাবেন না। পারস্পরিক সহায়তাতেই সাফল্য পেতে হবে।
এভাবেই সাহায্য করার বিষয়টা তাদের মগজে গেঁথে গেছে। ফিনল্যান্ডের অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, জীবনে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই । আর যা আমার হাতে নেই, তা নিয়ে অস্থির হওয়ার কোন কারণও নেই। মানুষকে সুখী করার পেছনে রাষ্ট্রের ভূমিকা থাকে। ফিনল্যান্ডেও এর ব্যতিক্রম নয়। দেশটির জিডিপি, মাথাপিছু আয়, স্বাস্থ্য, গড় আয়ু স্বাধীনতারসহ বিভিন্ন দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে। তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশও অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। ফিনল্যান্ডকে বলা হয় হৃদের দেশ। এই সব কারণে আপনি ভাবতে পারেন ফিনল্যান্ড সুখি দেশ।