তৈরি পোশাকের পাশাপাশি চা একটা সময় গুলিস্তান থেকে পুরনো কাপড় কিনে পড়েছেন আজ তিনি কর্মচারীদের বেতনবাব’ দেন 120 কোটি টাকা। তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন হা-মীম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট শিল্পপতি একে আজাদ। একে আজাদের হা-মীম গ্রুপ চা ,পাঠ ও পরিবহন সেক্টরে ও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মিডিয়া জগতে ও তার শক্ত পদাচরণ। একে আজাদ ‘দৈনিক সমকাল’ -এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক। এছাড়াও তিনি চ্যানেল ২৪- এর চেয়ারম্যান। তাকে বলা হয় সেলফ-ম্যাড ম্যান !
মেধাবী আত্মপ্রত্যয়ী শিল্পোদ্যোক্তা এ কে আজাদের জন্ম ফরিদপুরের ঝিলটুলির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পাঁচ ভাই আর চার বোনের বিশাল সংসার ছিল তাদের। তার উপরেই দাঁড়িয়েছিল পরিবারের সকল দায়িত্ব। একে আজাদ যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ওই বয়সেই সিদ্ধান্ত নেন- চাকরি নয়, ব্যবসায় নামবেন। কিন্তু পড়াশোনা আর গার্মেন্টস ব্যবসা একসাথে চালাতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠে যায়। সকাল ৮ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্লাস, এরপর শুরু হতো প্রাকটিক্যাল। প্রাকটিক্যাল শেষে ছুটতেন নিজের ফ্যাক্টরিতে। একটা সময় ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যায়। কাঁধে জেগে বসে সাত লাখ টাকার ঋণের বোঝা।
৮০ দশকে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ৭ লাখ টাকা ঋণে পড়ার মানে এখনকার সময়ে কোটি টাকা ঋণের সমান। তখন দেশের গার্মেন্টস ব্যবসা ছিল পুরনো ব্যবসায়ীদের হাতে। এ কে আজাদ সিদ্ধান্ত নেন, পুরনো ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। নতুন ব্যবসায়ীদের নিয়ে এ কঠিন কাজে নেমে পড়েন। তার পর এ কে আজাদ নতুন করে ব্যবসা শুরু করেন। কোনো রকমের অফিসের ব্যবস্থা করেন। গুলশান ১ নম্বর মার্কেট থেকে পুরনো- চেয়ার টেবিল কিনে আনেন। অফিসে যেহেতু বিদেশি প্রতিনিধিরাও আসবে তাই এসির দরকার ছিল।
তখন পাসপোর্ট অফিস ছিল ইস্কাটনে। সেখানে একজন পুরনো এসি নিয়ে কাজ করতেন। এ কে আজাদ সেখান থেকে মাসে ২০০০ টাকার ভাড়ার বিনিময়ে এসি নিয়ে আসেন। এমনই অবস্থায় ছিল তার তরুণ বয়সের পথ চলা। পরবর্তীতে এ কে আজাদের ব্যবসার পরিধি দেশ ছারিয়ে বিদেশেও ছড়িয়েছে। তার প্রতিষ্ঠিত হা-মীম গ্রুপে বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তা- কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার। প্রতি বছর শত শত মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করছে হা-মীম গ্রুপ। তিন যুগ আগে রাজনীতি ছাড়লেও বর্তমানে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন।
তিনি ফরিদপুর- ৩ আসনের এমপি। এ কে আজাদ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন FBCCI- এর সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি দেশকে অনেক কিছুই দিয়েছেন। ফরিদপুরের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করেছেন। স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এছাড়া হা-মীম ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে তরুণদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি পুরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান।