RanR : সিনেমাপ্রেমী এক ইউটিউবারের গল্প..। হ্যা.. লো কাছেল মানুষজন, ব্যন্ড নিউ ভিডিওতে আপনাকে স্বাগতম” -এভাবেই দর্শকদের স্বাগতম জানান ইউটিউবার রাশেদুজ্জামান রাকিব। যাকে RanR নামেই সবাই চেনে। চলচ্চিত্র নিয়ে সুস্থ ও রুচিশীল কনটেন্ট তৈরি করে তিনি আলাদা পরিচিতি পেয়েছেন। বিনোদনের পাশাপাশি রাকিবের ভিডিওতে সিনেমার তথ্য -উপাত্ত কাহিনির আর যুক্তির কমতি থাক না।
সিনেমার গল্পের অসংগতি কাহিনির নকল ধরিয়ে দেওয়া কিংবা অশালীন সংলাপ নিয়ে আলোচনা যেমন চলে ভাল সিনেমার প্রশংসাও সমানে চলে।
রাশেদুজ্জামান রাকিব থেকে RanR হয়ে ওঠার জার্নি সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
২০১৭ সালে ইউটিউবার হিসেবে রাকিবের পথচলা শুরু হলেও ইউটিউবার হওয়ার ভুত তার মাথায় এসেছিল ২০১৪ সালে। একদিন সুইডিস ইউটিউবার পিউডিপাই-এর ভিডিও দেখে তাঁর মনে ধরে যায়। একে একে সব ভিডিও দেখে ফেলেন। তখনই তাঁর মাথায় আসে- তিনি কেন এরকম একটা চ্যানেল খুছেন না। রাকিব ছোটবেলায় সুযোগ পেলেই বসে পড়তেন বাংলা সিনেমা দেখতে। আর পরের দিন স্কুলে গিয়ে সেটির কাহিনী মজা করে বন্ধুদের বলতেন।তা ছাড়া সিনেমার কাহিনীগুলো সাধারণভাবে বললে কেউ শুনতে আগ্রহ দেখাত না। তাই বলার সময় বাড়তি রস যোগ করে বলতেন। আর তা শুনে সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেত।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করা রাকিবের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে। ভিডিও কনটেন্ট বানানোর পাশাপাশি তিনি দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান চাকরি করছেন। ২০১৬ সালে ইউটিউব প্লাপফর্মে
কাজের পরিকল্পনা করেন রাকিব। বাস্তবে লাজুক আর শান্ত প্রকৃতির হওয়ায় প্রথমদিকে তিনি কথা বলতে বেশ জড়তা অনুভব করতেন। জড়তা না কাটার কারণে সে বছল কাজে না নেমে অন্য বিষয়গুলে গোছাতে শুরু করেন। ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখে শিখে নেন ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ। শুরুর দিকে তাঁর কাছে ভিডিও বানানোর জন্য তেমন কিছুই ছিল না। প্রথম ভিডিও তৈরির পর মনে হয়েছিল এটা আপলোড করার মতো না। তবে আস্তে আস্তে উন্নতি হতে থাকে । ২০১৭ সালে রাকিব তাঁর চ্যানেলে প্রতি সপ্তাহে ভিডিও আপলোড করতেন। ৮ মাসে ৩২টি ভিডিও প্রকাশের পর তাঁর সাবস্ক্রাইবার হয় প্রায় ৫০ হাজার। কিন্তু হঠাত করে চ্যানেলটা হ্যাক হয়ে যায়।সে সময় এতটাই হতাশ হয়ে পড়েন যে ইউটিউবে টুকতেও ভয় পেতেন।
কিন্তু এই সিনেমা- ই তাকে হতাশা কাটিয়ে আবার ঘুড়ে দাঁড়াতে সাহস যোগায়। দ্য স্কিন আই লিভ ইন,নো মার্সির মতো কিছু সিনেমা দেখে তিনি আবার সাহস ফিরে পান। ২০১৭ সালে একই নামে নতুন একটি চ্যানেল খোলেন। বর্তমানে তার ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১৭ লাখেরও বেশি। কথার সাথে সাথে ভিডিওর মিল রেখে ভিডিও বাননোর জন্য তাকে অনেক সিনেমা দেখতে হয়। প্রতি ভিডিওতে একাধিক সিনেমার পাশাপাশি নানান মজার নাটকের অংশও ব্যবহার করেন তিনি। সেই ভিডিওতে আলোচনার সঙ্গে মিলিয়ে ৭০টি সিনেমার অংশ ব্যবহার করা হয়েছে।
এছাড়া সাকিব খানের পাসওয়ার্ড সিনেমার রিভিউতে রয়েছে ৬৪ টি সিনেমার অংশ। সিডি প্লেয়ারের যুগে রাশেদুজ্জামান রাকিব ৫ টাকা দিয়ে হুমায়ূন আহম্মেদের নাটকের সিডি ভাড়া করে আনতেন । একেক টা সিডি ৭দিন লাগিয়ে দেখতেন। যার কারণে হুমায়ূন আহমেদের বেশিরভাগ নাটকের দৃশ্য রাকিবের মুখস্থ হয়ে যায়। তাই ভিডিও বানানোর সময় কোনো ক্লিপ প্রয়োজন হলে হুমায়ুন আহমেদের নাটকের চরিত্রগুলো তাঁর মাথায় সহজে চলে আসে।
সিনেমাপ্রেমীক রাকিব ভবিষ্যতে নির্মাতা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। চঞ্চল চৌধুরী অভিনীতসাড়া জাগানো ওয়েব সিরিজ কারাগারও -এ তিনি একজন কো- রাইটার হিসেবে কাজ করছেন। মান হারাতে বসা সিনেমা নিয়ে রাশেদুজ্জামান রাকিবের মতো মেধাবী ও পরিশ্রমি তরুণ কাজ করলে, বাংলা সিনেমা সেই সোনালী সময়ে ফিরে যেতে পারে ।
ইহুদি না কি মুসলিম জয় হবে । ইরান ও ইসরাইল।