আল-ইজমা শরিয়তের তৃতীয় উৎস

পরিচয়: শরিয়তের তৃতীয় উৎস হলো ইজমা। ইজমা আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ-একমত হওয়া, ঐক্যবদ্ধ হওয়া, মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করা। ব্যবহারিক অর্থে কোনো বিষয় বা কথায় ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলে। ইসলামি পরিভাষায়, শরিয়তের কোনো বিষয়ে একই যুগের মুসলিম উম্মতের পুণ্যবান মুজতাহিদগণের (গবেষক) ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলা হয়। ইজমা মহানবি (স)-এর পরবর্তী যেকোনো যুগে হতে পারে। সাহিবিগণ থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত প্রতিটি যুগেই ইজমা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ইজমা কুরআন-সুন্নাহ সমর্থিত হওয়া আবশ্যক। কুরআন-সুন্নাহর মূলনীতি বিরোধী কিংবা কোনো অন্যায় ও পাপ কাজে ইজমা হয় না। ইজমা আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত মুসলমানদের জন্য এক বিশেষ মর্যাদা ও নিয়ামত।

ইজমার উৎপত্তিি

ইজমা বা ঐকমত্যের ভিত্তিতে কোনো সমস্যার সমাধান করা কিংবা নতুন বিধান প্রবর্তন করা কোনো নতুন ঘটনা নয়। বরং রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সময় হতেই এর ব্যবহার বা প্রচলন লক্ষ করা যায়। রাসুলুল্লাহ (স.) স্বয়ং বিভিন্ন বিষয়ে সাহাবিগণের পরামর্শ নিতেন। অত:পর তাঁদের মতামতের পর আলোকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,আর তাদের কাজকর্ম সম্পাাদিত হয় পারস্পারিক পরামর্শের ভিত্তিতে। (সুরা আশ-শুরা,আয়াত:৩৮) ।……এভাভেই রাসুলুল্লাহ (স.) ইজমার বৈধতা, দৃষ্টান্ত ও আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে সাহাবিগণের যুগে এর পূণাঙ্গ প্রচলন ঘটে। খলিফাগণ নতুন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে সর্বপ্রথম আল-কুরআনে এর সমাধান খুজতেন। তাতে খুজে না পেলে মহানবি (স.) এর হাদিসের মাধ্যমে সমাধান করতেন। আর যদি হাদিসেও সে সমস্যার সুস্পস্ট কোনো সমাধান না পেতেন তখন তাঁরা বিশিষ্ট সাহাবিদের মতামত নিয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সমাধান দিতেন।

যেমন-হযরত আবু বকর (রা.)-এর সময়ে সাহাবিগণের ঐক্যমত্যের মাধ্যমেই কুরআন সংকলনের কাজ শুরু করা হয়। দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা.) এর সময়েবিশ রাকাত তারাবি-এর সালাত জামাতের সাথে আদায় করার ব্যাপারে সাহাবিগণের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবে পরবর্তী যুগগুলোতেও ইজমার মাধ্যমে নানা সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করা হয়েছে।

গোপন পাপ থেকে বাঁচার উপায়!

সূরা আদ দুহা এর অর্থ

Leave a Comment